সেপিওসেক্সুয়ালিটি এবং তৎসংশ্লিষ্ট সুসমাচার

sepio sexuality

তবিবুল্লা একজন সেপিওসেক্সুয়াল। কিছুক্ষণ আগে সে বুঝতে পেরেছে যে তার সেপিওসেক্সুয়ালিটি সিনড্রোম আছে। এর অর্থটা অনেকটা ফিলোসোফির মতন। Phylos+Sophie, মানে জ্ঞানের জন্য ভালোবাসা (Love for Wisdom) ! আর এটা একজন মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রতি ভালোবাসা!

সে গুগল করে দেখেছে – ‘One who finds intelligence the most sexually attractive feature in a person is called sepio-sexual.’ অনেকটা মন আর মগজের প্রেম।

তবিবুল্লা যখন টের পেল তার সেপিওসেক্সুয়ালিটি আছে সে ভেবে দেখল, আসলেই তো, তার কাছে অপরপক্ষের মেধা, বুদ্ধিদীপ্ততা, নৈতিকতা, সামাজিকতা, প্রজ্ঞা, রুচি, বিবেক, বোধশক্তি কিংবা পড়াশুনার গভীরতাটাই বেশি কাম্য। রূপ কিংবা ক্যারিয়ার কিংবা অর্থ-বিত্ত কিংবা বিদেশি সিটিজেনশিপ কিংবা সোশ্যাল স্ট্যাটাস তো ছোটলোকদেরও আছে। কত লোকই তো কারেন্টের মিস্ত্রি, পানির মিস্ত্রি হিসাবে বাইরে সেটলড হইসে।

এই ভাললাগার মধ্যে কোন গিফট দেয়ানেয়া নাই, নাই কোন ক্যান্ডেল লাইট ডিনার, শুধুই অদ্ভুত এক আনন্দময়তা। বুদ্ধিমান মানুষটার প্রতি এক ধরনের গভীর আচ্ছন্নবোধ।

নেটে আরেকটু ঘাটাঘাটি করে দেখল, যারা এই সিনড্রোমে আক্রান্ত, তাদের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে আবেদনময় পুরুষ কিংবা নারী স্কারলেট জোহান্সসন, দীপিকা পাড়ুকোন, কিংবা টম ক্রুজ নয়। বরং বইয়ের নিচে লুকিয়ে থাকা টাকমাথা কদর্য চেহারার অতি বুদ্ধিমান মানুষটা!

ছাত্রাবস্থায় সে মাঝে মাঝে অনেক অপরূপ সুন্দরীকে ক্লাসের সবচেয়ে বোরিং, আঁতেল, দেখতে অসুন্দর কোন ভালছাত্র কিংবা বয়স্ক কদাকার কোন টিচারের প্রতি দুর্বল হতে দেখেছে। অবশ্য এরা সবাই বিউটি উইথ ব্রেইন ছিল। H20 মানে জানতো, উইশ করা কাকে বলে সেটাও বুঝত। সে ভেবে কুল পেত না এও কিভাবে সম্ভব। নরমালি অধিকাংশ সুন্দরী মেয়েই তো গোল্ড ডিগার হয়৷ গন্ধ পেয়ে টাকার নেশায় কানাগলিতে দৌড় দেয়।

বিটিভিতে অনেক আগে একটা বিজ্ঞাপন দেখাইত, রঙ ফরসা করার ক্রিমের। কালো চেহারার শার্প একটা মেয়েকে প্রথমে রফিকভাই অপছন্দ করার পরে ওই মেয়ে অলৌকিকভাবে ক্রিম মেখে ফরসা হয়ে যায়। নায়িকার সখী অনেকদিন পরে রফিককে দেখে টিটকারি মারে, ‘ রফিক ভাই জানল না সে কি হারালো!’ অথচ রফিকভাই কিন্তু সেই ট্রান্সপ্লান্টেড চোখা মাথার নায়িকারেই বিয়ে করছিল। তার মানে রফিক ভাইও সেপিওসেক্সুয়াল ছিলেন। উনি জানতেন, চামড়া অস্থায়ী কিন্তু মেধা সার্বজনীন।

হয়তো এধরণের পথভ্রষ্টদের উদ্দেশ্যেই আলেকজান্ডার পোপ বলেছেন, “Charms strike the sight, but merit wins the soul”

কাছাকাছি জনপ্রিয় উদাহরণ হুমায়ূন আহমেদ ও শাওন।

মগজের সুপার একটিভ কর্মক্ষমতার প্রতি তীব্র আকর্ষণে ঘায়েল হয়েই দেবীদের কাছে মিসির আলিরা জিতে যায়। সুঠামদেহী রুবেলরা ঝরে পড়ে অচ্ছুৎ হয়ে।

Your Comment